চিকিৎসা ও নার্সিং সেবায় ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - খ্রিষ্টধর্ম শিক্ষা - অঞ্জলি ৩ | | NCTB BOOK
11
11

উপহার ৪৫

চিকিৎসা ও নার্সিং সেবায় ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল

 

শিক্ষক তোমাদের কাছে অডিও, ভিডিও, ছবি, পোস্টার ও নির্ভরযোগ্য তথ্য সূত্রের মাধ্যমে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের চিকিৎসা ও নার্সিং সেবায় তার অবদান ও বাইবেলের নির্দেশনা তুলে ধরবেন। শিক্ষক বাইবেলে বর্ণিত স্বাস্থ্য সেবার আলোকে অনেক ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা ও নার্সিং সেবায় পৃথিবীব্যাপী বিশেষ অবদান রেখেছেন এমন কিছু বিষয় বলবেন। তাদের মধ্যে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। আজকের সেশনে শিক্ষক তোমাদের সাথে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জীবন, চিকিৎসা ও সেবাকাজ সম্পর্কে আলোচনা করবেন।

 

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলকে আলোকবর্তিকা বা The Lady with the Lamp নামে ডাকা হয়। তিনি ১৮২০ সালের ১২মে ইতালিতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯১০ সনের ১৩ আগস্ট লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে আহ্বান পেয়ে সেবাকাজ শুরু করেছিলেন। তিনি তার আহ্বানের মধ্যদিয়ে মানুষের দুঃখ-কষ্ট হ্রাস ও ঈশ্বরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে নার্সিং পেশা বেছে নিয়েছিলেন। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল আধুনিক নার্সিংয়ের মূল দার্শনিক। নার্সিং শিক্ষাকে আনুষ্ঠানিক করার জন্যে তার প্রচেষ্টা স্মরণীয়। তিনি মিডওয়াইফ এবং নার্সদের প্রশিক্ষণ বিষয়ে সুষ্পষ্ট ধারণা প্রদান করেন। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলকে ক্রিমিয়ান যুদ্ধের সময় তুরস্কে ব্রিটিশ এবং মিত্র বাহিনীর সৈন্যদের নার্সিং সেবাদানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তিনি দিনরাত অত্যন্ত যত্নের সাথে আহতদের সেবায় কাজ করেছেন, অসুস্থ সৈন্যদেরও সেবা প্রদান করেছিলেন। সৈন্যদের স্ত্রীদের হাসপাতালের লন্ড্রির কাজে নিয়োজিত করেছিলেন, সেখানে তারা পোশাক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা, ক্ষতস্থান ড্রেসিং করাসহ বিভিন্ন কাজে যুক্ত ছিলেন। ঐ সময় কলেরা ও বিভিন্ন ধরনের ছোঁয়াচে রোগের চিকিৎসা ও নার্সিং সেবাকার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়েছিল, তিনি তাদের সেবার দরজা উন্মুক্ত করেছিলেন। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল নার্সিং সেবার মান উন্নয়ন, রোগীর সঠিক পরিচর্যা, গুণগত মানের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ চিকিৎসা সেবায় প্রভূত উন্নয়ন করেন। হাসপাতালগুলোতে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল স্বাস্থ্যসেবায় নিজের জীবন চূড়ান্তভাবে উৎসর্গ করেন। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল'কে দক্ষতাপূর্ণ সেবাকাজের জন্যে' ইনস্টিটিউশন ফর সিক জেন্টেলওমেন' এর সুপারিনটেনডেন্ট পদে লন্ডনে নিয়োগ দেয়া হয়। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল ১৯০৭ সন' অর্ডার অব মেরিট' প্রাপ্ত প্রথম নারী। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর' ১২ মে আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস' পালিত হয়। আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবসে তার জন্ম স্মরণ করা হয় এবং স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে নার্সদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আলোচনা করা হয়।

 

সমাজ সংস্কারক ও পরিসংখ্যানবিদ হিসেবেও ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের ভূমিকা অনন্য। চিকিৎসা সেবায় ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের চিন্তা, সেবা, উন্নয়ন ও পরিচর্যার ধরন সারা বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়েছে। নার্সিং সেবায় তার ব্যবহৃত মডেল অনুকরণীয়। চিকিৎসা ও নার্সিং সেবাজগতে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর অবদান ও ত্যাগস্বীকার স্মরণীয় ও বরণীয়। আমাদের চারপাশ, বিদ্যালয় ও পরিবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা খুবই দরকার।

প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা

 

নিচের প্রশ্নের আলোকে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল চিকিৎসা ও নার্সিং সেবায় কী কী ভূমিকা রেখেছিলেন এবং বাইবেলের আলোকে শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা বিষয়ে ধারণা সুস্পষ্ট করো।

১. ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলকে কী নামে ডাকা হয়? তাকে কোন পদক দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছিল? 

২. চিকিৎসা ও নার্সিং সেবাকাজে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের ভূমিকা বর্ণনা করো। 

৩. আন্তজার্তিক নার্স দিবস কত তারিখ? ঐ দিনে কী করা হয়?

Content added || updated By
Promotion